💰 বাংলাদেশে খারাপ ক্রেডিট বা সীমিত ঋণ ইতিহাস থাকলে ক্ষুদ্র ঋণ তুলনা করুন

যদি অতীতে মিসড পেমেন্ট বা কম ক্রেডিট স্কোরের কারণে ঋণ পাওয়া কঠিন হয়ে থাকে, তাহলে এই গাইডটি আপনাকে জানাবে কোন বাংলাদেশী ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলি ব্যক্তিগত ঋণ প্রদান করে, সেগুলি কীভাবে কাজ করে এবং আবেদন করার আগে কী কী বিষয় খেয়াল রাখা উচিত।

I. বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণ কী?

ক্ষুদ্র ঋণ হলো এমন একটি ব্যক্তিগত ঋণ পণ্য যা তাদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে যারা কম ক্রেডিট স্কোর, ডিফল্ট বা সীমিত ঋণ ইতিহাসের কারণে প্রচলিত ব্যাংক ঋণ পেতে পারে না। এই ঋণগুলি দৈনন্দিন খরচ, জরুরি বিল, ঋণ একত্রিতকরণ বা ছোট ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল পূরণের জন্য সহায়ক।

প্রচলিত ব্যাংকগুলির তুলনায়, কিছু বাংলাদেশী ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ (Grameen Bank), কম সুদের ক্ষুদ্র ঋণ, দ্রুত অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া এবং ঋণগ্রহীতার আয়ের ভিত্তিতে কিস্তি পরিকল্পনা প্রদান করে।

II. শীর্ষ ৩টি ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান

1. গ্রামীণ ব্যাংক (Grameen Bank)

• ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত, গ্রামীণ ব্যাংক বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।
• গ্রুপ ভিত্তিক ঋণ প্রদান পদ্ধতি, যেখানে ৫ জন সদস্যের একটি গ্রুপ গঠন করে ঋণ প্রদান করা হয়।
• গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ প্রদান করে, বিশেষ করে নারীদের জন্য।
• ঋণ পুনঃপ্রদান হার প্রায় ৯৮%।
  আরও জানুন: গ্রামীণ ব্যাংক

2. বিআরএসি (BRAC)

• ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত, বিআরএসি বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়ন সংস্থা।
• ক্ষুদ্র ঋণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সেবা ইত্যাদি প্রদান করে।
• নারীদের জন্য গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ প্রদান করে।
• প্রতি বছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের ঋণ বিতরণ করে।
  আরও জানুন: বিআরএসি

3. এএসএ (ASA)

• ১৯৭৮ সালে প্রতিষ্ঠিত, এএসএ একটি স্বনির্ভর ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।
• গ্রুপ ভিত্তিক ঋণ প্রদান পদ্ধতি, যেখানে ৩০-৪০ জন সদস্যের একটি গ্রুপ গঠন করে ঋণ প্রদান করা হয়।
• ঋণ পুনঃপ্রদান হার প্রায় ৯৯.৬৩%।
  আরও জানুন: এএসএ

III. যোগ্যতা

ক্ষুদ্র ঋণের জন্য সাধারণ যোগ্যতা:

• বাংলাদেশি নাগরিক
• ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স
• স্বতন্ত্রভাবে বা গোষ্ঠীভিত্তিকভাবে ঋণগ্রহণের জন্য প্রস্তুত
• আয়ের প্রমাণ এবং বৈধ পরিচয়পত্র প্রদান (IISER Journal)

কম ক্রেডিট স্কোর বা সীমিত ঋণ ইতিহাস থাকলেও, এই প্রতিষ্ঠানগুলি ঋণ প্রদান করে থাকে।

IV. সুদের হার ও ঋণ শর্তাবলী

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণের সুদের হার সাধারণত ২২% থেকে ৩৫% বার্ষিক হয়।
যেমন, ডাবি ও প্রগতি ঋণের বার্ষিক সুদের হার ২২% (Poverty Action Lab)
গ্রামীণ ব্যাংক, বিআরএসি ও এএসএ-এর সুদের হারও এই পরিসরে থাকে (CGAP)।

V. আবেদন প্রক্রিয়া

1. প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করুন — আয়ের প্রমাণ, পরিচয়পত্র ইত্যাদি।
2. প্রতিষ্ঠানের যোগ্যতা শর্তাবলী পর্যালোচনা করুন।
3. ঋণ অফারগুলি তুলনা করুন, সুদের হার, কিস্তি পরিকল্পনা এবং ফি বিবেচনায় রেখে।
4. অনলাইন বা সরাসরি আবেদন করুন।
5. অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করুন — কিছু প্রতিষ্ঠান ১–২ কার্যদিবসের মধ্যে ঋণ প্রদান করে।

VI. তুলনামূলক টেবিল

VII. চূড়ান্ত চিন্তা

বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ঋণগুলি ঐসব ব্যক্তিদের জন্য সহায়ক হতে পারে যারা প্রচলিত ব্যাংক ঋণ পেতে পারে না।
সতর্কভাবে তুলনা করে এবং বুঝে-শুনে ঋণ গ্রহণ করলে আর্থিক চাপ এড়ানো সম্ভব।

📌 দ্রষ্টব্য: এই নিবন্ধটি শুধুমাত্র তথ্যগত উদ্দেশ্যে এবং ঋণ প্রদান করে না।
➡ আপনার পরিস্থিতির জন্য উপযুক্ত ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলি চিহ্নিত করতে গবেষণা করুন।